২১শে পদকপ্রাপ্ত দক্ষিণাঞ্চলের বরেণ্য সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামালার রায় ঘোষণা দিয়েছে আদালত। আজ দেড়টায় খুলনার বিশেষ দায়রা জজ ও বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ রব হাওলাদার জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিজ্ঞ বিচারক ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অপর দুই আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
নিহত মানিক চন্দ্র সাহা একুশে টেলিভিশন, জাতীয় পত্রিকা দৈনিক সংবাদ ও ডেইলী নিউ এজ’র খুলনার দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সাথে বিবিসির খন্ডকালীন সংবাদদাতার দায়িত্বে ছিলেন।
মামলাটির যথাযত তদন্ত না হয়ে এই রায় দেওয়া হয়েছে। এ রায়ে আসামীরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে উচ্চ আদালতে আপীল করবেন বলে জানান আসামী পক্ষের আইনজীবী।
সাংবাদিক হিসেবে এই মামলায় আসামীদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা থাকলেও আদালতের রায়ে তার প্রতিফলন হয়নি। সাংবাদিক সমাজ এই রায়ে সন্তুষ্ঠ নন।
২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারী বেলা দেড়টায় খুলনা প্রেসক্লাবে মাত্র ৫০ গজ দুরে আততায়ীদের বোমাহামলায় নিহত হয় খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মানিকচন্দ্র সাহা। আর এই বোমার আঘাতে তার মাথা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। এই ঘটনার দুই দিন পর খুলনা থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক রনজিৎ কুমার দাস অজ্ঞাতনামা আসামী করে দুটি মামলা নথিভুক্ত করেন। মামলা দুটি তদন্ত শেষে পর্যায়ক্রমে তদন্তকারী কর্মকর্তারা ১৩ জনকে আসামী করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। সাক্ষ্য গ্রহণের এক পর্যায়ে আদালত ন্যায় বিচারের স্বার্থে হত্যা মামলাটি অধিকতর তদন্তে পাঠিয়ে দেন। তদন্ত শেষে এই মামলায় আরো একজনকে সম্পৃক্ত করে ২০০৭ সালের ২ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়। এ মামলায় ৫ আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকী ৬ আসামী শুরু থেকে পলাতক রয়েছে। মামলার বিচার চলাকালে অন্য তিন আসামী ক্রস ফায়ারে নিহত হয়।
মামলার রায়ে বিস্ফোরক অংশে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় সকল আসামীকে খালাস দেওয়া হয়। এবং হত্যা মামলা অংশে ৩০২/৩৪ ধারায় সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ৯ আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
দীর্ঘ এক যুগ পরে আজ এই রায়ে অপরাধিদের সাজা হওয়ায় সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানান রাষ্ট্রপক্ষের কৌশূলী।