(বাংলাদেশী গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য/ প্রাকৃতিক দৃশ্য)
এমন স্নিগ্ধ নদী কাহার?
ওথায় এমন ধুম্র পাহাড়?
কোথায় এমন হড়িৎ ক্ষেত্র
আকাশ তলে মেশে?
এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায়
বাতাস কাহার দেশে
প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র আমাদের এ রূপসী বাংলাদেশ। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়, জলপ্রপাত, বনভূমি এদেশকে করে তুলেছে অপূর্ব রূপময়।এছাড়াও বাংলাদেশের কিছু পাহাড়-পর্বত ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ এক বিশাল বদ্বীপ। অর্থাৎ, সমভূমি অঞ্চল।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও রূপ, লাবণ্যের কথা বলে শেষ করা যায় না। যতই বলি মনে হয় যেন কম বলা হয়েছে। এদেশের অনুপম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চিরকাল ধরে মুগ্ধ কবিচিত্তে কাব্যস্রোত বইয়ে দিয়েছে—
ভাবুকের হৃদয়ে অনির্বচনীয় ভাবের ঢেউ জাগিয়েছে। বাংলাদেশে যে কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে যে কোন দিকেই দৃষ্টিপাত করি না কেন চোখ দুটো প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে ধন্য হয়, মনপ্রাণ আনন্দে ভরে ওঠে। কি পাহাড় টিলার রমনীয় শোভা, কী গাছপালা ও তৃণমূল শোভিত বনের মনোরম দৃশ্য, কী কলনাদিণী নদনদীর অপরূপ সৌন্দর্য, কী শ্যামল শোভাময় ফসলের ক্ষেত সবই এদেশে সুন্দর ও অনুপম । বাংলাদেশের প্রকৃতির এরূপ সৌন্দর্য দেখেই দ্বিজেন্দ্রলাল রায় লিখেছেন—
"ধনধান্যে পুষ্পেভরা আমাদের এই বসুন্ধরা,
তাহার মাঝে এছে দেশ এক-সকল দেশের সেরা;
ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা;
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমা,
সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।"
বাংলাদেশে এমন কোন স্থান নেই যেখানে সৌন্দর্যের এতটুকু ভাটা পড়েছে। সাগর রাতদিন তার পা ধুয়ে দিচ্ছে, নদী তার কটিদেশ ও গলায় মেঘলা ও চন্দ্রহারের মতো শোভা পাচ্ছে, মাঠের শ্যামলিমা তাকে শাড়ির মতো ঘিরে রেখেছে এবং সবুজ বনরাজি তার শিড়ে মুকুট পরিয়ে দিয়ে রানীর সাজে সাজিয়েছে। চট্টভূমি থেকে বরেন্দ্রভূমি পর্যন্ত সবখানে এ রূপের জোয়ার উতলে উঠেছে— কোথাও এতটুকু কমতি নেই।